মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি পারবেন করোনামুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে।

Reporter Name
  • Update Time : Sunday, February 14, 2021
  • 154 Time View

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি পারবেন করোনামুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে। ৪০ বছর পর্যন্ত নাগরিকদের টিকা প্রদানের আওতায় এনে যে যুদ্ধ শুরু করেছেন সেখানে মানুষ এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছে। পরিস্থিতিও হাতের মুঠোয় এসেছে।

করোনামুক্ত বাংলাদেশ বিশ্বকে উপহার দিতে আপনার সামনে ইতিহাসের হাতছানি। ৪০ বছর থেকে নামিয়ে নিম্নে ১৮ বছর পর্যন্ত সব নাগরিককে এখনই টিকা বা ভ্যাকসিন গ্রহণের আওতায় নিয়ে এলে করোনামুক্ত বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে উদ্ভাসিত হবে। আগামী শতাব্দীতে আপনি সে ইতিহাস সৃষ্টির খাতায় নাম লেখাবেন গৌরবের সঙ্গে। দেশের সুনাম বাড়বে। আপনি করতে পারবেন। আপনার এক যুগের শাসনামল নিয়ে যত কথাই হোক দেশকে পৃথিবীর সামনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেলে দাঁড় করিয়ে দেশকেই নয়, নিজেকেও নেতৃত্বের দক্ষতায় ক্যারিশমায় সাহসে বিরল নজির স্থাপন করেছেন। ৯ লাখ ঘরহীনকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার টার্গেট নিয়ে এর মধ্যে ৭০ হাজার ঘর নির্মাণ করে ঘরহীন মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। আরও ৫০ হাজার ঘর ঘরহীনদের দিতে ১ হাজার কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। এ যে বঙ্গবন্ধুর সেই অন্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের নিশ্চয়তাবিধানের আরেক বিপ্লব শুরু করেছেন। এমন বিপ্লবের জন্য যে কলিজা লাগে তার প্রমাণ দিয়েছেন। দেশে গণজাগরণ ঘটিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, করোনার শুরুতে চিকিৎসাব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। অর্থনীতি ছিল স্থবির। সিদ্ধান্ত গ্রহণে আপনি বিলম্ব করেননি। নিজেই যার নেতৃত্বের প্রাজ্ঞতা দিয়ে মুমূর্ষু স্বাস্থ্য খাতকে জাগিয়ে করোনাযুদ্ধে সুসংগঠিত করেছেন নতুন চোহারায় দ্রুত। আপনি করোনা ও অর্থনীতির উন্নয়ন অব্যাহত রাখার যুদ্ধে সফল নায়কের আসন নিয়েছেন। ব্যবসায়ীরাও অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। অর্থনীতি প্রশংসিত হয়েছে। অনেক শিল্পপতি, আমলা, লেখক, সাংবাদিক, চিকিৎসক থেকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রাণ হারালেও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশকে অনেক নিরাপদ রাখা গেছে। যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের বেদনা ও ক্ষতি কখনো পুষিয়ে উঠবে না। দেশের জন্যও অনেক মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি। যারা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন তারা জানেন কোন কেয়ামত থেকে ফিরে এসেছেন। করোনা মহামারী কবে থামবে কেউ জানে না। পৃথিবী তবু প্রতিরোধের ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছে। আপনি আপনার দূরদর্শিতা ও সাহস আর অঙ্গীকার পূরণ করেছেন। পশ্চিমা দেশের ৪০-৫০ ঊর্ধ্ব অনেকে যেখানে টিকা পাচ্ছেন না সেখানে বাংলাদেশ নিম্নে ৪০ বছর পর্যন্ত টিকা নিতে পারছে। টিকা নিয়েও বিরক্তিকর বিতর্ক-কুৎসা যারা প্রচার করেছিলেন তাদের মুখেও ছাই পড়েছে। দলমত-নির্বিশেষে আপনার ডাকে ও সুন্দর ব্যবস্থাপনায় আজ মানুষ টিকা গ্রহণে এগিয়ে এসেছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও করোনার ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা হিসেবে দারুণ ভূমিকা রাখছেন। শুরুতে জীবন দিয়ে তারা যে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন আপনার তদারকি ও সাহসে প্রেরণায় তারা আজ অনেক সফল এত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও। এখন নিম্নে ১৮ বছর পর্যন্ত করোনা টিকা গ্রহণের নির্দেশ দিলে দেশের ছাত্র-কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত তরুণসমাজ করোনা প্রতিরোধ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিরাপদে সতর্কতার সঙ্গে ভূমিকা রেখে দিনযাপন করতে পারে। করোনার ভয়ও দূর হবে। এক কথায় আমরা যেখানে আছি সেখানে দেশ করোনামুক্ত করার ইতিহাস গড়তে পারবেন আপনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজেটে করোনা মোকাবিলায় থোক বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা রেখেছেন। করোনাভাইরাসের টিকা আমদানিতে ৪ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে আরও ১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৩ কোটি ডোজ কিনেছেন। ছয় মাসে ৫০ লাখ করে এ ডোজ আসবে। ৫০ লাখ ডোজ এসেছে। ভারত আরও ২০ লাখ ডোজ উপহার দিয়েছে। ৭০ লাখ ডোজ হাতে নিয়ে টিকাদান শুরু করলে দেশব্যাপী সব বয়সের নারী-পুরুষ এর মধ্যে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩০৯ জন টিকা নিয়েছেন। শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ১৩ লাখ ৬৮ হাজার মানুষ। রোজ টিকা গ্রহণে মানুষের কি উচ্ছ্বাস। বাড়ছে মানুষ। বলছে কারও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। টিকা দেওয়া শুরুর পর দেশে করোনায় মৃত্যু কমেছে। মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। যা গত ৪০ সপ্তাহের কম। গেল বছর ৬ মে প্রথম করোনায় মৃত্যু হয়েছিল তিনজনের। আক্রান্তের সংখ্যাও কমে বৃহস্পতিবার ছিল ৪০৪। দেশে মোট ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনা মহামারীতে। মারা গেছেন ৮ হাজার ২৫৩ জন। ওয়ার্ল্ডোমিটারসের হিসাবে সারা বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯১ হাজার ৫১৬ জন। মারা গেছেন ২৩ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৪ জন। সর্বোচ্চ আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ৮০ লাখ ৩ হাজার ৭৭২ জন। সেখানে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৯ জন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত করোনার টিকা গ্রহণের আওতায় আনার চিন্তাভাবনা করছেন। এখনই তাদের টিকা গ্রহণের সুযোগ দিলে দেশ করোনামুক্ত হবে এমন আলামত দেখা যাচ্ছে। আপনি ব্যবসাবান্ধব, কৃষিবান্ধব, শ্রমিকবান্ধব, নারীবান্ধব প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছেন। দেশের সব মেগা প্রকল্পসহ উন্নয়নকাজও এগিয়ে চলছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ও খাবার দিয়েছেন। আপনি পারবেন প্রয়োজনে আরও টিকা কেনার বরাদ্দ বাড়াতে। আপনিই পারবেন এখনই ১৮ বছর পর্যন্ত নিম্নে সব মানুষকে টিকা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে এ বিপ্লবকে সফল করতে। আপনি পারবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি পারছেন।

নতুনধারা সংবাদ টিভি

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category