সুনামগঞ্জের পাগলা- জগন্নাথপুর- আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের জগন্নাথপুর – সুনামগঞ্জ সড়কে কোন্দানালা নামক সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পরার ঘটনায় অন্য ৬ টি সেতু নিয়েও জনমনে উদ্বেগ – উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
এই সেতুগুলি কতটুকু নিরাপদ তা নিয়েও আতংকের শেষ নেই।
তবে রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাতে ধসে যাওয়া সেতুটির ৫ টি গ্রার্ডার ধসে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কতৃপক্ষ।
এদিকে ধসে যাওয়া সেতুটি দেখার জন্য সোমবার সকাল থেকে দেখতে বিপুল সংখ্যক লোক ভীড় জমায়। আজ মঙ্গলবার এলাকার লোকজন সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ধসে যাওয়া সেতু দেখার জন্য সরেজমিনে আসেন।
এ সময় তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মানসহ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন।
জানা যায়, সড়কের পাগলা পয়েন্ট থেকে জগন্নাথপুর উপজেলার অংশে একশত কোটি, ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাতটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
সিলেট বিভাগের সববৃহৎ সেতু কুশিয়ারা নদীর উপর নিমাণার্ধীন সেতুর কাজেও নিয়োজিত,
এমএম বিল্ডার্স নামের এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ধসে যাওয়া সড়কের কোন্দানালা নামক স্থানে নির্মিত সেতুর দৈর্ঘ্য ৫০.১২মিটার ও প্রস্ত ১০.২৫ মিটার। গত এক বছর ধরে সেতুর নির্মাণ কাজ চলছিল।
আগামী ডিসেম্বরে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির ৫ টি গার্ডার ধসে মাটির সাথে মিশে গেছে।
জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এলাকার অনেকেই জানান, নিম্নমানের কাজের কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের খেয়ালখুশি মত কাজ করছে ফলে এই নতুন সেতু ভেঙ্গে পড়েছে।
এটি ইতিহাসে বিরল যা আমাদের এলাকার দূর্নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
একটি সেতু এভাবে ধসে যাওয়ায় একই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আরো ছয়টি সেতুর কাজ নিয়ে আমরা চিন্থিত।
জগন্নাথপুর এলাকার অনেকেই জানান, রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীতে চলমান আমাদের স্বপ্নের সেতুতে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
এই সেতু নিয়েও আমাদের আশংকা রয়েছে।
যদি এভাবে সেতু ধসে পরে তাহলে আমাদের স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন হবে না।
তারা কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর উপর নজর রাখতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করে বলেন,
সরকার যোগাযোগের উন্নয়নে যে বরাদ্ধ দিয়েছে এই টাকা যেন এভাবে অপচয় বা ক্ষতি না হয়। তারা নিম্নমানের কাজের জন্য দায়ীত্বে থাকা উপ- সহকারী প্রকৌশলী মুস্তাফিজুর রহমানকে দায়ী করে দায়ীত্বে চরম গাফিলতি ও অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্সের প্রকল্প ব্যবস্থাপক হারুনুর রশীদ বলেন, হাইডোলিক জেকের মাধ্যমে গার্ডার বসানোর সময় হাইড্রোলিক জ্যাকের পাইপ ফেটে যাওয়ায় জ্যাকটি ফেল করে, যার ফলে গার্ডার পড়ে যায়। একটি গার্ডার থেকে আরেকটি গার্ডারের দূরত্ব ২ মিটার। যে কারণে একটির ধাক্কায় আরেকটি এভাবে ৫ টি গার্ডার পড়ে যায়। তিনি কাজে কোন অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন।
তদারকির দায়িত্বে থাকা
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেতুটির প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
হঠাৎ করে একটি দূর্ঘটনায় সেতুটি ধসে পড়ে। তিনি বলেন, কাজে কোন অনিয়ম হয়নি। তার মতে, একটি গার্ডারের ওজন ১৬০ টন ফলে গার্ডারটি বসানোর সময় হাইডোলিক জেকের পাইপ ফেটে যাওয়ায় ৫ টি গার্ডার ধসে পড়ে।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, এটি আসলে দূর্ঘটনা। অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।